দর্শকদের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি শুরু হয়েছিল ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে। শুরুতে ছিল বিটিভির নিজস্ব প্রযোজনা। ১৯৯৪ সালের ২৫ নভেম্বর প্যাকেজ প্রোগ্রামের আওতায় বিটিভিতে ‘ইত্যাদি’র প্রচার শুরু হয়।
অংকের হিসেবে টানা ৩৬ বছর ধরে ইত্যাদি প্রচার হচ্ছে বিটিভিতে। ইত্যাদির কল্যাণে হানিফ সংকেত শুধু দেশে নয় গোটা বিশ্বে বাংলা ভাষাভাষি মানুষের অনেক পছন্দের মানুষ। প্রিয় তারকা। পাশাপাশি ইত্যাদি শুধু একটি জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান নয় সমাজ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটি বিশ্বস্থ ঠিকানায় রুপ নিয়েছে।
বয়স্ক যারা তাদের নিশ্চয়ই মনে আছে। ৮০’র দশকে ফজলে লোহানী বিটিভির জন্য ‘যদি কিছু মনে না করেন’ নামে একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন। হঠাৎ একটি পর্বে হানিফ সংকেত অংশ নিতে দেখা যায়। একটা সময় ফজলে লোহানীর সহকারি হিসেবে ‘যদি কিছু মনে না করেন’ অনুষ্ঠানে কাজ করতে শুরু করেন।
‘যদি কিছু মনে না করেন’ অনুষ্ঠানটি এতো জনপ্রিয় ছিল যা না দেখলে বিস্বাস করা মুশকিল হটাৎ ৮০’র দশকে ফজলে লোহানী নিয়ে আসেন হানিফ সংকেত কে, সেই থেকেই ১৯৮৯ সালে হানিফ সংকেত বিটিভিতে ইত্যাদি নামে চালু করেন এই ম্যাগাজিন
অনুষ্ঠানটি আজও চলছে সেই জনপ্রিয় অনুষ্ঠানটি।
১৯৮৫ সালে ফজলে লোহানী মারা যান। ফলে একটা সময় ‘যদি কিছু মনে না করেন’ অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৯ সালে হানিফ সংকেত বিটিভিতে ‘ইত্যাদি’ নামে নতুন একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান শুরু করেন। প্রয়াত ফজলে লোহানী ছিলেন তার অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রেরণা।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও দীর্ঘস্থায়ী টেলিভিশন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে "ইত্যাদি" এক অনন্য নাম বাংলাদেশ টেলিভিশনে তিন মাস অন্তর সম্প্রচারিত হয় এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি ।
এই অনুষ্ঠানটির মূল আকর্ষণ হলো—সমাজের অসংগতি, কুসংস্কার ও নানা সামাজিক সমস্যা ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা। উপস্থাপক ও নির্মাতা হানিফ সংকেত নিজেই এই অনুষ্ঠানকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে গেছেন। ইত্যাদির প্রতিটি পর্বে থাকে:
- নানা-নাতি ও মামা-ভাগ্নে নামের হাস্যরসাত্মক নাট্যাংশ
- বিদেশি চলচ্চিত্রের বাংলা সংলাপ পর্ব
- দর্শক অংশগ্রহণমূলক কুইজ ও খেলা
- দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থান ও সংস্কৃতি নিয়ে প্রতিবেদন
ইত্যাদির আরেকটি বিশেষ দিক হলো—প্রতিটি পর্ব দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক বা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ধারণ করা হয়। যেমন, সম্প্রতি মোংলা বন্দরে এবং বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে ধারণ করা পর্বগুলোতে ঐতিহ্য, প্রকৃতি ও ইতিহাসকে দারুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে
এমনকি ইন্টারনেট ও ইউটিউবের যুগেও ইত্যাদি সব বয়সী দর্শকের কাছে সমানভাবে প্রিয়। এটি শুধু বিনোদন নয়, বরং শিক্ষামূলক ও সমাজ সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান হিসেবেও বিবেচিত হয়।