সিলেটের এক এক জামায়াত নেতার পক্ষে মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য দেওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী নির্বাচনে জামায়াত নেতার জন্য শুভকামনাও জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা। পাশপাশি আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগের ফিরে আসা সম্ভব নয় বলওে মন্তব্য করেন তিনি।
জামায়াত নেতার পক্ষে দেওয়া ওই আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য ইতোমধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
আলোচিত ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম কালা মিয়া। তিনি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানীগঞ্জের বেকিমোড়ার পাড় বাজারে সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীনের মতবিনিময় সভায় এমন বক্তব্য দেন তিনি। যদিও জয়নাল আবেদীন বলছেন, এটি কোন মতবিনিময় সভা নয়, বরং একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অনানুষ্টানিক আলাপ।
ছড়িয়েপেড়া ভিডিতে দেখা যায়, কালা মিয়া বক্তব্য রাখছেন। পাশেই জামায়াত নেতা জয়নাল আবেদীন বসা। কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর নিয়ে গঠিত সিলেট-৪ আসনে জয়নাল আবেদীনকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। তিনি জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
ভিডিওতে কালা মিয়াকে বলতে শোনা যায়, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আবার এই দেশে আইতে হইলে (আসতে হলে), জন্ম নিতে হইলে, ১০-১৫ বছরের আগে সম্ভব নয়। যদি আইত পারে, দীর্ঘ দিন যাইত ওইব ওলান (অপেক্ষা করতে হবে)।’
জামায়াত নেতা জয়নাল আবেদীন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন আমরার চেয়ারম্যানসাব (জয়নাল) আইছইন, সামনেদি (আসছেন সামনে) নির্বাচনে এমপি পদপ্রার্থী ওইবা (হবেন) আল্লাহর যদি হুকুম ওয়। আর তাইন পাস করতা পারইন (তিনি পাস করতে পারলে) আমরার এলাকার মানুষ যারা ভোট দিবা; যারা হাটবা-খাটবা তারতো মূল্যায়ন পাইত। যদিন ফেইলও মারইন, তা-ও মূল্যায়ন পাইত। ফেইল মারলেও তো এমপি। আমরা আশা করছি, আল্লাহ পাস কারাউক্কা। দলে যদি সরকার গঠন না করে; তবে আমরা ইগু আশাবাদী জামায়াতে ইসলাম বিরোধী দল থাকব। এর তাকি বেশি দূরে না যাইয়ার।’
কালা মিয়া বলেন, ‘যদি পাস না-ও করতে পারে, জামায়াতে ইসলামরে বিরোধী দল তনে হরাইয়া রাখতা পারতা নায় (জামায়াতকে বিরোধী দল থেকে সরিয়ে রাখা যাবে না)। আর যা দল আছে, নতুন দল নাগরিক পার্টি একটা বাইর করছে, এরা যে কতটা সিট পাইব, পাবলিকেও জানে তারাও জানে। তারার তো ইচ্ছা দেশ দখল করি লাইতা (দেশ দখল করার ইচ্ছা)। কিন্তু ইলেকশনে খারাইয়া দেখউক্কা (দাঁড়িয়ে দেখুক) কত ধানে কত চাল বারই।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও চাইরাম আমরার সেন্টারে জামায়াতে ভোট পাউক অর্ধেক, আর বিএনপি নেউক অর্ধেক। তাঁরাও যেহেতু নির্যাতিত...আগে পাইছইন না; তারাও পাইত। আমরা চাইরাম সমান সমান ফিফটি ফিফটি করিয়া।’
এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা কালা মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
জামায়াত নেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি ওই এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানে স্থানীয় লোকদের নিয়ে অনানুষ্টানিক বৈঠক করি। বৈঠকে কালা মিয়া বিভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে ফিফটি ফিফটি ভোটের কথা বলেছেন। তাকে আমি আগে চিনতাম না।