মার্কিন ফেডারেল কমিশনের রিপোর্টের কড়া সমালোচনা করেছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার। ওই রিপোর্টটি একপেশে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছে নয়াদিল্লি।
এর আগে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ) তাদের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ওই রিপোর্টে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ (র)-কে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে কমিশন। রিপোর্টে ভারতে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও দায়ী করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই তার নিন্দা করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, মার্কিন ফেডারেল কমিশনের ওই রিপোর্টটি বিদেশ মন্ত্রকের নজরে এসেছে। ওই রিপোর্টে আবার পক্ষপাতমূলক এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মূল্যায়ন করার ধারা জারি রয়েছে।
নয়াদিল্লির অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থাপিত করার চেষ্টা করেছে। ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে প্রকৃত উদ্বেগের ক্ষেত্রগুলোর পরিবর্তে ভারতের একটি প্রাণবন্ত এবং বহুমুখী সংস্কৃতিতে ভরা সমাজব্যবস্থার উপর সন্দেহ প্রকাশের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে করছে কেন্দ্র। মার্কিন কমিশনের ওই রিপোর্টে ইচ্ছাকৃতভাবে একটি এজেন্ডাকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি।
রণধীর জয়সওয়াল আরও বলেন, ১৪৪ কোটি মানুষের দেশ ভারত। এখানে সব ধর্মের মানুষ রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন ভারতের বহুত্ববাদী চিত্র বা সব ধর্মের সহাবস্থানকে স্বীকৃতি দেবে, এমন কোনো আশা আমরা করি না।
বিজেপি সরকার বলছে, ভারত গণতন্ত্র এবং সহনশীলতায় বিশ্বাস রাখে। ভারতের অবস্থানকে দুর্বল করার এই ধরনের চেষ্টা কখনও সফল হবে না। উল্টো মার্কিন এই কমিশনকেই একটি ‘উদ্বেগের বিষয়’ বলে চিহ্নিত করা উচিত।
ফেডারেল কমিশনের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিখ নেতাদের হত্যার চেষ্টায় ‘র’-এর যোগ রয়েছে। সেই কারণেই এই সুপারিশ করেছে তারা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়েও মন্তব্য করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
মার্কিন প্রশাসনের অধীন এই কমিশনটির মূল কাজ হলো বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর নজর রাখা। সেই মতো মার্কিন সরকারকে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে এই কমিশন।
এর আগে মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই দাবি করেছিলো, ভারতে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষিত সংগঠন শিখ ফর জাস্টিসের (এসএফজে) নেতা পন্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন ‘র’-এর প্রাক্তন কর্মকর্তা বিকাশ যাদব। যদিও নয়াদিল্লি তখনই জানিয়েছিলো, ওই ঘটনার সঙ্গে ভারত সরকারের কোনো যোগ নেই।