1. motinbishnes@gmail.com : সোনালী সিলেট : সোনালী সিলেট
  2. info@www.sonalisylhet.com : সোনালী সিলেট :
সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
দায়িত্ব সম্পূর্ণ করেই সরকারকে যেতে হবে, মাঝপথে চলে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই মে মাসের ২৪ দিনে এল সোয়া ২ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স ড. ইউনূস জুন মাসের ৩০ তারিখের পর একদিনও ক্ষমতায় থাকবেন না: প্রেস সচিব সিলেটে পাঁচ লাখ টাকার ভারতীয় ক্রীমসহ একজন গ্রেফতার সুনামগঞ্জে স্কাউটসের উদ্যোগে গবেষণা ও মূল্যায়ণ ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জে তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ বিষয়ক আলোচনা সভা সম্পন্ন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা রাখতে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দেয়ার দাবি বিএনপির নির্বাচনের আগে সংস্কারের দাবি জামায়াতের সুনামগঞ্জে বিনামূল্যে চক্ষু রোগীদেরকে সেবা দিল এনজিও পদক্ষেপ

ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি

ডিজিটাল ডেস্ক🖊
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

 

দেশব্যাপী সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) উত্তাল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আসিয়া ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, ক্লাস পরীক্ষা বর্জন ও প্রতিবাদী সমাবেশের মাধ্যমে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘ফাঁসি’ কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা থালা-বাসন, খুন্তি, চামচ হাতে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের সাথে শহীদুল্লাহ হলসহ অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে যোগ দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা “তুমি কে আমি কে? আসিয়া, আসিয়া”, “ উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস ফর আসিয়া”, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস”, “আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই”, “একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে”, “ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও”— এমন নানা প্রতিবাদী স্লোগানে পুরো ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করে তোলেন। রাতভর চলতে থাকে শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ কর্মসূচি। রাত পেরিয়ে গতকাল রোববারও দিনব্যাপী প্রতিবাদ মিছিল করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে অন্তত ৩০টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন। বিভিন্ন ব্যাচ ও বিভাগ আলাদা আলাদা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে এবং লিখিত বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

যেসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান, ইংরেজি, রসায়ন, গণিত, দর্শন, ফার্সি, ইএসওএল, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা, লোকপ্রশাসন, ভাষাবিজ্ঞান, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ, সংগীত, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বাংলা, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, পদার্থবিজ্ঞান, মার্কেটিং, ম্যানেজমেন্ট, টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ব্যাংকিং অ্যান্ড বীমা ও সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।

শনিবার রাতভর বিপুল উপস্থিতিতে সকল ধরনের নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিয়েছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থান হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছিল। প্রতিবাদ মিছিল থেকে জানতে চাইলে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়া সুলতানা বলেন, আমরা চাই, যেনো কোনো ধর্ষক আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে। তাদের কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করতেই হবে।

সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী সামিয়া রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর চলতে দেওয়া যাবে না। আমরা চাই, অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।

লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহজাবিন বলেন, প্রতিদিন ধর্ষণের খবর শুনতে শুনতে আমরা অসহ্য বোধ করছি। কিন্তু বিচার না হওয়ায় অপরাধীদের মনে ভয় কাজ করছে না। আমরা চাই এমন কঠোর শাস্তি, যা দেখে ভবিষ্যতে কেউ এই জঘন্য অপরাধ করার সাহস না পায়।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ফ্যাসিবাদী প্রশাসনিক কাঠামো ভাঙতে না পেরে আমাদের রাষ্ট্র নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে । বয়স, পেশা, ধর্ম নির্বিশেষে নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে, তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। নারীরা নিজের ঘরে নিরাপদ না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ না, কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ না। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী নারীর প্রতি ঘটা সহিংসতাকারীদেরকে শনাক্ত করতে প্রায়ই ব্যার্থ হয়, আটক করলেও জামিনে ছেড়ে দেয়া হয়। আইন মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড লিখিত থাকলেও তা কার্যকর করা হয় না।

তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করছি কাঠামোগতভাবে এই রাষ্ট্র ধর্ষণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম না, আমরা মনে করি আইনগত দুর্বলতা বাংলাদেশে ধর্ষক তৈরি করে। আমরা এখানে দাড়িয়েছি ধর্ষন নিপীড়নের বিরূদ্ধে, নারীবিদ্বেষী আগ্রাসী মব, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে। আমরা বলতে চাই- আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে ধর্ষকদের শ্রেণী, বয়স, পেশা, ক্ষমতা নির্বিশেষে দ্রুততম সময়ে শনাক্তকরণ করতে হবে, আটক করতে হবে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে শনিবার বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনের মাধ্যমে শিশু আসিয়ার ধর্ষকের ফাঁসির দাবি জানায় এবং ধর্ষণ প্রতিরোধে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করে। এছাড়া, টিএসসি মাঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এক কর্মসূচির মাধ্যমে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানায়। রাত ৮টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে রাজু ভাস্কর্যে আরও একটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনাগুলো নিয়ে নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান চেয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি একটাই— ধর্ষকদের দ্রুত বিচার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট